সমগ্র মানবমন্ডলীর সর্বকল্যাণ ও মুক্তির দিশায় প্রাণাধিক প্রিয়নবীর শুভাগমনের দান ও লক্ষ্য সত্যের মুক্ত প্রবাহ এবং দুনিয়ার প্রতিটি মানুষের অধিকার-স্বাধীনতা-মানবতা ফিরে পাওয়ার একমাত্র পথ প্রিয়নবী প্রদত্ত সর্বজনীন মানবিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও মুক্ত মানবতার অবিভাজ্য বিশ্বব্যবস্থা খেলাফতে ইনসানিয়াত- ইমাম হায়াত
দয়াময় আল্লাহতাআলার নূর ও রাসুল, মানব জীবনে সত্য ও জ্ঞান এবং জীবনের সকল আলোকমালার উৎস, সকল মিথ্যা-মূর্খতা-আঁধার-অশুভ-অকল্যাণ-অপশক্তির বিণাশ থেকে মুক্তির উৎস মহান প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দুনিয়ায় মহাকল্যাণময় শুভাগমন ঈদে আজম উদ্যাপন উপলক্ষ্যে, বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন চট্টগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে লালদীঘী ময়দানে এক বিশাল মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেমে দ্বীন, ইমামে আহলে সুন্নাত, মুজাদ্দিদে জামান, ওস্তাজুল ওলামা, শায়খুল হাদিস, মুর্শেদে হাক্কানী, ওলীয়ে রাব্বানী, হাফেজ আল্লামা হজরত সৈয়দ ছাইফুর রহমান নিজামী শাহ্। এতে সভাপতিত্ত্ব করেন এবং দিকনির্দেশনামূলক মূল বক্তব্য রাখেন বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সর্বজনীন ও মানবিক রাষ্ট্র ও বিশ্বব্যবস্থা- বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব এর প্রবর্তক আল্লামা ইমাম হায়াত।
সভাপতির ভাষনে মহাসমাবেশের মূল বক্তা আল্লামা ইমাম হায়াত দুনিয়ায় প্রাণাধিক প্রিয়নবীর মহান শুভাগমন ঈদে আজম এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য উপলব্ধিকে অস্তিত্ত্বের প্রাণপ্রবাহ উল্লেখ করে বলেন, জীবন সত্য ও মুক্তির ধারায় থাকবে নাকি মিথ্যা ও বিণাশের ধারায় থাকবে তা কেবল এ উপলব্ধির উপর নির্ভর করে, দুনিয়ায় জীবনের কল্যাণ ও বিকাশের ধারা জ্ঞান-বিবেক-ন্যায়-নিরাপত্তা-অধিকার-স্বাধীনতা-সমৃব্ধির ধারক শুভশক্তি কায়েম থাকবে নাকি এর বিপরীত অন্যায়-অবিচার-বর্বরতা-হিংস্রতা-পাশবতা-পরাধীনতা-স্বৈরতার ধারক অপশক্তি কায়েম থাকবে তা প্রিয়নবীর মহান শুভাগমন ঈদে আজমের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের উপর নির্ভর করে। তিনি বলেন, মহামহিম পবিত্র আহলে বায়েত, মহামান্য খোলাফায়ে রাশেদীন, মকবুল সাহাবায়ে কেরাম, সত্যের সকল ইমামবৃন্দ ও আওলিয়া কেরাম সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে যুগ থেকে যুগান্তরে আমাদের নিকট মহান প্রিয়নবীর শুভাগমনের দান, লক্ষ্য ও আলোকধারা পৌছিয়ে দিয়েছেন, যাঁদের এহসান ব্যতীত জীবন ও দুনিয়া সে দান-লক্ষ্য ও আলোকধারা হারিয়ে আঁধার বিণাশে নিমজ্জিত হয়ে যেত, তাঁদের উত্তরাধিকার হিসেবে যা আজ আমাদেরও জারি রাখায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে।
ইমাম হায়াত বলেন, প্রিয়নবীর মহান শুভাগমন ঈদে আজমের মূল বিষয় রেসালাতেইলাহী মহান প্রিয়নবীকে পাওয়ার মাধ্যমে ও প্রিয়নবীর হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে আল্লাহতাআলাকে পাওয়া ও আল্লাহতাআলার হয়ে যাওয়া। সত্য তথা ঈমানের পবিত্র কলেমার মর্মধারা রেসালাত কেন্দ্রিক তাওহীদ ভিত্তিক জীবন চেতনার আলোকধারায় একাত্ম হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে এবং মিথ্যা তথা নাস্তিক্যউদ্ভূত বস্তুবাদী জীবন চেতনা থেকে মুক্ত হওয়ার মাধ্যমে ঈমানী আত্মসত্ত্বা তথা আল্লাহতাআলা ও তাঁর হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্পর্কিত জীবনের ভিত্তি তৈরি হয়। তিনি বলেন, পবিত্র কলেমার অঙ্গীকার তথা ঈমানী জীবন চেতনার সত্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিপরীত চেতনায় তথা মিথ্যার ধারায় যুক্ত থাকলে আল্লাহতাআলা ও তাঁর হাবীবের সম্পর্ক থাকে না, বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ইমাম হায়াত বলেন, প্রিয়নবী ই সব মানুষের জন্য সত্য ভিত্তিক জীবন ও জীবনের সকল দিশা এবং জীবন বিকাশের সকল অধিকার মালিকানার রূপরেখা দান করেছেন যার ভিত্তিতে দুনিয়া সবার সব মানুষের তথা একক গোষ্ঠির নয়। একক ধর্ম-জাতি-গোত্র-ভাষা-শ্রেণী-বর্ণের ভিত্তিতে দুনিয়ার বিভক্ত কাঠামো তথা একক গোষ্ঠি ভিত্তিক রাষ্ট্র ও বিশ্ব দয়াময় আল্লাহতাআলা ও মহান প্রিয়নবীর দেয়া সত্য ও জীবন অস্বীকারের উপর প্রতিষ্ঠিত যা জীবনের সকল অধিকার-মালিকানা-নিরাপত্তা-স্বাধীনতা-গতি-বিকাশ রূদ্ধ হরণ উৎখাত করে সত্য ও জীবন বিরোধী বাতেল জালেম অপশক্তির স্বৈরতা কায়েম রাখে তাদের গোষ্ঠিবাদী অপরাজনীতির প্রক্রিয়ায়। তিনি বলেন, মহান মকবুল সাহাবায়ে কেরাম অপরিসীম ত্যাগের বিনিময়ে সত্যবিরোধী মানবতাবিরোধী অপশক্তির মোকাবেলা করে প্রিয়নবীর শুভাগমনের দান ও লক্ষ্য ঈমান-দ্বীন-ইনসানিয়াতের আলো প্রজ্জলিত করেছিলেন এবং কারবালায় প্রাণের ইমামে আকবার রাদিআল্লাহু আনহু তা রক্ষা ও প্রবাহিত রাখার জন্য পবিত্র শাহাদাতের সর্বোচ্চ ত্যাগের মাধ্যমে আমরা সকল মুমিনকে পবিত্র কলেমার সে আমানত অর্পন করেছেন।
পরিশেষে সত্য ও মানবতার চলমান ক্রমঅবণতিশীল এ মহা সংকটে মুক্তির পথ নির্দেশ করে ইমাম হায়াত বলেন, সর্বকল্যাণের উৎস প্রাণাধিক প্রিয়নবীর দুনিয়ায় শুভাগমনের লক্ষ্য ঈমান-দ্বীন-নাজাতের প্রবাহধারা রক্ষায়, সত্য ও মানবতার রূপরেখা প্রতিষ্ঠায় এবং মিথ্যা-অবিচার-বিণাশের গ্রাস থেকে মানব জীবনকে রক্ষায় প্রিয়নবী প্রদত্ত- দুনিয়ার সকল মানুষের সম অধিকার-স্বাধীনতা-নিরাপত্তা ভিত্তিক তথা একক ধর্ম-জাতি-গোত্র-শ্রেণীর একক গোষ্ঠিবাদী অন্যায় স্বৈর আধিপত্যমুক্ত সর্বজনীন মানবতার রাষ্ট্রব্যবস্থা ও মুক্ত মানবতার অবিভাজ্য বিশ্বব্যবস্থা খেলাফতে ইনসানিয়াতই বাতেল জালেম অপশক্তির কবলে বিপন্ন দ্বীন-মিল্লাত ও রূদ্ধ মানবতার মুক্তির একমাত্র উপায়।